পরিবেশ ও জলবায়ু , এশিয়া
বিদেশে এখন
ভারতে চলছে বিশুদ্ধ পানির হাহাকার
তৃষ্ণার্ত ভারতে বিশুদ্ধ পানির হাহাকার। ১২০০ ফুট গভীর কুয়ো খুঁড়েও মিলছে না পানি। ভূগর্ভে পানির স্তর অতিরিক্ত নিচে নেমে যাওয়ায় আকাশ ছুঁয়েছে পানির দাম; বাড়তি খরচ পোষাতে না পেরে সপ্তাহে পাঁচ গ্যালন পর্যন্ত পানি কিনতে পারছে নিম্নবিত্ত অনেক পরিবার। ইস্ট এশিয়া ফোরামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে বছরে প্রায় দুই লাখ মানুষের প্রাণ যায় ভারতে।

এ বছর দেশটির বড় অংশের ওপর দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় তীব্র হচ্ছে পানি সংকট। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়ার দূষিত পানি ব্যবস্থাপনা সূচকে বলা হয়, ইতিহাসের ভয়াবহতম পানি সংকটে ভুগছে ভারত, চরম সংকটে ৬০ কোটি মানুষ।

ইস্ট এশিয়া ফোরামে বিশ্বের শীর্ষ গবেষকদের পিয়ার রিভিউড বিশ্লেষণে সম্প্রতি উঠে আসে, ভারতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে প্রতি বছর প্রায় দুই লাখ মানুষের মৃত্যুর তথ্য। ইয়েল ইউনিভার্সিটির ২০২২ সালের দূষিত পানি পান সূচকে ১৮০ দেশের তালিকায় ভারতের অবস্থান ১৪১তম।

গবেষণায় উঠে এসেছে, ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ পানি দূষিত। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে পানির চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। পানি সম্ভাব্য তীব্র সংকট কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের পাশাপাশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে দেশটির বার্ষিক প্রবৃদ্ধিতেও। কারণ ভূগর্ভস্থ পানি ভারতের কৃষি ও শিল্প খাতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিতে সেচের জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকলে তা খাদ্য সংকটেরও কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

এপি'র জলবায়ুবিষয়ক সংবাদকর্মী সিবি আরাসু বলেন, 'পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করতে বাসিন্দাদের জন্য নতুন নতুন গর্ত খোঁড়া হচ্ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে কিছুটা দেরি হয়ে গেছে। কারণ কিছু কুয়ো খোঁড়া হয়েছে যেগুলো ১২০০ ফিট পর্যন্ত গভীর। কিন্তু তাও পানি মিলছে না। অনেক এলাকা পানিশূন্য। বৃষ্টিই এখন একমাত্র আশা। না হলে এবারের গ্রীষ্মে বেশ কঠিন সময়ই পার করতে হবে।'

গ্রামাঞ্চলে সুপেয় পানিরও প্রধান উৎস ভূগর্ভস্থ পানি। ভারতে সুপেয় পানির ৩০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ। দেশটিতে কৃষিকাজে সেচের ৬০ শতাংশ এবং সাধারণের পান করার জন্য ৮৫ শতাংশ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল। ভূগর্ভে পানির স্তর অতিরিক্ত নিচে নেমে যাওয়ায় আকাশ ছুঁয়েছে পানির দাম; বাড়তি খরচ পোষাতে না পারায় নিম্নবিত্ত অনেক পরিবার সপ্তাহে মাত্র পাঁচ গ্যালন পানি কিনতে পারছে।

এভিএস