পরিবেশ ও জলবায়ু
দখল-দূষণে বুড়িগঙ্গা হবার পথে কর্ণফুলী
দখল দূষণের হাত থেকে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় দুই পাড়ে ৫০ কিলেমিটার ব্যতিক্রমী প্রচারণা শুরু করেছেন চট্টগ্রামের পরিবেশবিদ ও বিশিষ্টজনরা। এসময় বক্তারা বলেন, আদিকাল থেকে সারা বিশ্বের সাথে পরিচিতি পেয়েছে। সে নদী এখন দখল, দূষণে বুড়িগঙ্গা হবার পথে।

দখল ও দূষণ থেকে কর্ণফুলী নদী রক্ষায় ঐতিহ্যবাহী সাম্পানে করে ব্যতিক্রমী এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন চট্টগ্রামের পরিবেশবিদরা। নদীর দুই পাড়ে যোগ দেয় শত শত মানুষ। নগরীর অভয়মিত্র ঘাট থেকে শুরু হয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলে সাম্পান প্রচারণা।

সাংস্কৃতিক কর্মী দিলরুবা খানম বলেন, 'যদি আমরা বেঁচে থাকতে চাই তাহলে নদীকে রক্ষা করতে হবে। এ নদীর সাথে বেঁচে আছে জেলেসহ হরেক রকম পেশাজীবী মানুষ।'

বক্তারা বলেন, কর্ণফুলী নদীর পাড়ে বন্দরকে ঘিরে দেশের ৯৫ ভাগ আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য হয়, ৬০০ এর বেশি কারখানা দুই পাড়ে। বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থনীতি ঘুরে এ নদীকে ঘিরে।

সাম্পান বাইচ দিয়ে চলছে নদী রক্ষার প্রচারণা। ছবি: এখন টিভি

মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'কর্ণফুলীর সঠিক প্রবাহ যদি না থাকে আর পানি যদি দূষিত হয় তাহলে আমরা পানি পাবো না। চট্টগ্রামের ৭০ লাখ মানুষ পানি সংকটে ভুগবে।'

কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি সমিতির সভাপতি পেয়ার আলী বলেন, 'দখলদাররা লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধভাবে দখলগুলোকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী ও হাইকোর্টের নির্দেশ অবজ্ঞা করে দখল চলছে। জনগণই একমাত্র এদেরকে উৎখাত করতে পারে।'

বিনি সুতোর মালা নামে তিনদিনব্যাপী নদী রক্ষার এ প্রচারণায় সাম্পান বাইচ, নৌ-র‌্যালিসহ নানা আয়োজনে সচেতন করা হবে দুই পাড়ের মানুষকে।

বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান বলেন, 'নদী দখলদার শিল্পপতি ও রাঘববোয়ালরা আইনের নানা ফাঁকফোকর ব্যবহার করে উচ্ছেদে বাধা তৈরি করছে। ফলে এক দশকেরও বেশি সময় আন্দোলন করেও আমরা এর সুরাহা করতে পারছি না।'

প্রতিদিন নগরীর ৭০ লাখ মানুষের স্যুয়ারেজ বর্জ্য পড়ছে নদীতে। সিটি করপোরেশনের হিসাবে, প্রতিদিন ১৫০ টন প্লাস্টিকসহ কয়েকশো টন আবর্জনা খাল হয়ে নদীতে মিশছে। এছাড়া মিশছে ৬০০ কারখানার বর্জ্য। এতে ১৭ প্রজাতির মাছ গত এক দশকে বিলুপ্ত হয়েছে। এখন ১৫০ প্রজাতির মাছ থাকলেও তা হুমকির মুখে।

এভিএস